ইসলামের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র এক ব্রিটিশ গোয়েন্দা ডায়েরী (1 Products)

By: C M Abdullah Khan 25 Jan 2015

মুসলিমদেরকে দলে-উপদলে বিভক্ত করার লক্ষ্যে ইসলামের মূল জ্ঞানে ভুল ঢুকানো হয়েছে যেভাবে। Leave a reply ইন্নাল হামদালিল্লাহি রাব্বিল আ’লামীন। বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম। সালামুন আ’লা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম ওয়া সালামুন আ’লাল মুরসালীন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হ্যামফের (Hampher) নামক এক বৃটিশ গোয়েন্দার লেখা একটি ডায়েরী জার্মানদের হস্তগত হয়। বিখ্যাত জার্মান পত্রিকা ইসপিগল পরবর্তীতে ডায়েরীটির লেখাগুলো ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করে। ডায়েরীটির ইংরেজী ভার্শন Hakikatkitabevi ওয়েব সাইটে Confessions of a British spy নামে আছে। ঐ ডায়েরী থেকে জানা যায়- খোলাফায় রাশেদিন যুগে প্রায় অর্ধ পৃথিবী ব্যাপি ইসলামের প্রসার লাভ করে, এটি কোনভাবেই খৃষ্টানগণ মেনে নিতে পারছেনা। আর তাই সকল খৃস্টান বিশেষজ্ঞগণ একত্রে মিলে এক মহা পরিকল্পনা গ্রহণ করে। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী খোলাফায়ে রাশেদীন যুগের অবসানের পর পরই পশ্চিমা গোয়েন্দারা ইসলামের বিরুদ্ধে এক গভীর ষড়যন্ত্রে মেতে উঠে। ডায়রী থেকে আরো জানা যায়, ঐ গোয়েন্দা হ্যামফের কে ইসলামী শিক্ষায় শিক্ষিত করে, একটি বিশেষ মিশনে পাঠানো হয় মধ্যপ্রাচ্যে। সে প্রথমেই পৌঁছায় খোলাফায়ে রাশেদিনের কেন্দ্রস্থল ইস্তাম্বুলে। সেখানে সে স্থানীয় মুসলমানদের মাতৃভাষা তুর্কি রপ্ত করে এবং মুসলমানদের সাথে নিয়মিত মসজিদে যাওয়া আসা শুরু করে। পরবর্তীতে সে ওখানকার এক ইসলামী নেতা আহমদ ইফেন্দীর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করে এই বলে যে, সে একজন ইয়াতিম, দুনিয়ায় তার আর কেউ নেই, কোন অর্থ সম্পদও তার নেই। সঙ্গত কারনেই আহমদ ইফেন্দী তাকে আশ্রয় দেন এবং তাঁর কাছ থেকেই ঐ গোয়েন্দা পরিপূর্ণভাবে কোরআন শিক্ষা লাভ করে। ওখানেই সে তুর্কি, আরবী, কোরআন ও শরীয়ত শিক্ষায় ব্যাপক সাফল্য অর্জন করে। এরপর ঐ গোয়েন্দা দ্বিতীয় মিশন নিয়ে ইরাকের বসরায় গমন করে এবং সাধারণ লোকদের সাথে ব্যাপক বন্ধুত্ব তৈরী করে। বসরার এক বিশিষ্ট ব্যক্তির সাথে সে বন্ধুত্ব স্থাপন করে এবং তার ইসলামী জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে ঐ ব্যাক্তিকে ভুল পথে পরিচালিত করতে শুরু করে। অতঃপর ঐ গোয়েন্দা নিজেই একজন বিজ্ঞ আলেম সেজে ঐখানে একটি মাদ্রাসা খুলে বসে। তার ডায়েরী থেকে আরো জানা যায় ঐ সময়টিতেই তার মতো আরো বহু এজেন্ট একইরকমভাবে বিভিন্ন মুসলিম অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে মিশন শুরু করে। তারা ইসলামী চিন্তাবিদগণকে ভুল পথে পরিচালিত করতে শুরু করে, আবার ক্ষেত্র বিশেষে নিজেরাই বিজ্ঞ আলেম সেজে কুরআন-হাদিসের ভুল ব্যাখার মাধ্যমে বিভিন্ন রকম ফতোয়া দিতে শুরু করে। তারা বহু মাদ্রাসা খুলে আরবী শিক্ষা দেওয়া শুরু করে এবং শিক্ষার সিলেবাসে এমন কিছু ভুল সুকৌশলে ঢুকিয়ে দেয়, যেন সকল মাদ্রাসা ছাত্রগণই ভুল ইসলামী শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে উঠে। তারা আরেকটি কাজ সুকৌশলে করতে সফল হয়, যা হচ্ছে- কোরআন-হাদিসের ভুল ব্যাখ্যা করে ইসলামে বিভিন্ন রকম কোন্দলের সৃষ্টি করা, যার পরিণতিতে ইসলামে বিভিন্ন দল ও উপদলের সৃষ্টি হতে শুরু করে। তার ডায়েরী থেকে জানা যায়, ঐ এজেন্টদের দুইটি প্রধান টার্গেট দিয়ে পাঠানো হতো : ১) মুসলমানদের দুর্বল (বিশেষ করে জ্ঞানের) জায়গাগুলো খুঁজে বের করা। ২) ঐ পথে তাদের দেহে প্রবেশ করা এবং তাদের জোড়াগুলোকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া। এটিই শত্রুকে পরাজিত করার মূল পথ। ঐ ডায়েরীর বিষয়বস্তু বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা করে তাদের যে কর্ম পরিকল্পনা পাওয়া যায় তা নিম্নরূপ : ইসলামের শত্রুরা, ইসলামের মূল জ্ঞানে ভুল ঢুকিয়ে মুসলমানদের ধ্বংস করার জন্য হাজার হাজার গোয়েন্দা হিজাজ (মক্কা-মদিনা), মিশর, ইস্তাম্বুল, ইরাক, ইরানসহ সকল মুসলিম দেশে পাঠিয়ে দেয়। ঐ গোয়েন্দাদের বৃটেনের এক গোপন মাদ্রাসায় আরবী শিখিয়ে কোরআন, হাদিস ও শরীয়াহ জ্ঞানে পারদর্শী আলেম হিসাবে তৈরী করা হয়, অথবা তারা কর্মস্থলে গিয়ে আরবী শিখে কোরআন, হাদিস ও শরীয়াহ জ্ঞানে পারদর্শী হয়ে আলিম বনে যায়। গোয়েন্দারা আলিম হিসাবে মুসলিম দেশ, বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল, ভাইস প্রিন্সিপাল, শিক্ষক, মসজিদের খতিব, শিশুদের আরবী গৃহ-শিক্ষক ইত্যাদি পদে চাকুরী নেয়। ঐ গোয়েন্দা আলেমরা মুসলিম দেশ, বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম বিশেষজ্ঞদের ধোঁকা দিয়ে কোরআন-হাদিসের ভুল ব্যাখ্যা করায় অথবা নিজেরাই বিশেষজ্ঞ সেজে ভুল ব্যাখ্যা দিতে শুরু করে। গোয়েন্দা আলেমরা মুসলমানদের সাথে মিলেমিশে মাদ্রাসা গড়ে তোলে। অতঃপর তাদের তৈরী করা ভুলগুলো বিভিন্নভাবে, বিশেষ করে মাদ্রাসার সিলেবাসে ঢুকিয়ে দিয়ে মুসলিম সমাজে ব্যাপকভাবে প্রচার ও গ্রহণযোগ্যতা পাওয়ার ব্যবস্থা করে দেয়।

  • Sort By:

Recently Viewed